বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পুলিশের কনস্টেবল ইমাম হোসাইন ইমনকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন ও পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৫ জানুয়ারি) মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ, গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম ও আব্দুল্লাহ আল নোমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, তারেক আব্দুল্লাহ ও তানভীর হাসান জোহা।
এর আগে তাকে গ্রেফতারের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় এবং নিয়ম অনুযায়ী গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। চানখাঁরপুলে ৫ আগস্টের একই ঘটনায় গ্রেফতার দেখানো অন্য আসামি পুলিশের কনস্টেবল সুজন হোসেনকেও কারাগারে পাঠানো হয়। তার সঙ্গে একত্রে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে একই মামলায় গত ১২ জানুয়ারি কনস্টেবল সুজন হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন তাকে হাজিরের পর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও সুলতান মাহমুদ।
পরে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, কনস্টেবল সুজন হোসেন এপিবিএন-এর সদস্য। ওনাকে ৫ আগস্ট চানখারপুলে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে শান্তিপূর্ণ ছাত্র-জনতার ওপর খুব ঠান্ডা মাথায় গুলি করছিলেন। খুব আরাম-আয়েশ করে, ভাবভঙ্গি নিয়ে আবার গুলি করছেন এবং সাতজন মারা গেছেন। তার আচার-আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি এটিকে পারসোনালি নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, এর ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। অন্য মামলায় তিনি গ্রেফতার ছিলেন। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে হাজির করার নির্দেশ দেন। এ মামলায় ডিটেনশন (গ্রেফতার) আদেশ দিয়েছেন। পরবর্তী তারিখ আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি।
সুলতান মাহমুদ বলেন, এ ভিডিওটা ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শাহবাগ থানার মামলায় সুজন হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১ জানুয়ারি তাকে হাজির করার জন্য (প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট) আবেদন দিয়েছিলাম। ট্রাইব্যুনাল সেটা মঞ্জুর করেছিলেন। তাই তাকে ১২ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে এবং কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ওই ঘটনায় আরও কারা কারা জড়িত সেটা তদন্ত করা হচ্ছে।