জিম্মি মুক্তির অনুষ্ঠান ‘অপমানজনক’ দাবি করে ফিলিস্তিনিদের মুক্তিতে নতুন শর্ত দিলো ইসরায়েল

  • আপলোড টাইম : ১২:১৪ পিএম, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
ছবি: সংগৃহিত

।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
যুদ্ধবিরতির চুক্তির অংশ হিসেবে গত শনিবার ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।

ওইদিন দখলদার ইসরায়েলের ৬০২ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। তবে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে এখনো সেসব ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়নি তারা।

এ নিয়ে দখলদার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, হামাস পরিচালিত জিম্মিদের মুক্তি অনুষ্ঠান ‘অপমানজনক’ হওয়ায় তারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছেন। এর ফলে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তি সম্পর্কিত মতবিরোধ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। খবর এএফপি।

গতকাল সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারি নতুন শর্ত দিয়েছে ইসরায়েল। তারা বলেছে, যদি হামাস তাদের আরও চার জিম্মির মরদেহ ফেরত দেয় এবং এগুলো ফেরত দেওয়ার সময় কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা না করে তাহলে আজই ৬০২ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েনেত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

তারা বলেছে, নতুন শর্তের ব্যাপারে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোতে অবহিত করা হয়েছে। তবে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো কী জানিয়েছে, এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। এছাড়া হামাসও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, হামাস যখন ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেয়, তখন মঞ্চে তাদের নিয়ে আসা হয় এবং হাত নেড়ে গাজাবাসীদের উদ্দেশে অভিবাদন জানাতে বাধ্য করা হয়। নেতানিয়াহু এ বিষয়টি ‘অপমানজনক’ এবং প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা তিনি বলেন, এটি আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করে। তার মতে, এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জিম্মিদের ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একেবারেই নিন্দনীয়।

উল্লেখ্য গত শনিবার বিকেলে মুক্তিপ্রাপ্ত এক ইসরায়েলি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের  দুই যোদ্ধার কপালে চুমু খেয়েছেন। যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে নুসিরাতের হস্তান্তরের স্থানে মঞ্চে উপস্থিত হয়ে জিম্মি ইসরায়েলিদের হাসতে দেখা গেছে। এ সময় জিম্মিদের একজন তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ফিলিস্তিনি দুই যোদ্ধার কপালে চুমু খান।

ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস বারবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। নেতানিয়াহু কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই অপমানজনক অনুষ্ঠানগুলো বন্ধ না হলে পরবর্তী পর্যায়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি স্থগিত রাখা হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, যতদিন না হামাস এমন অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি দেবে, ততদিন যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী ধাপের বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না।

প্রসংগত, গত ১৯ জানুয়ারি দখলদার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। তিন ধাপের এ যুদ্ধবিরতিটির প্রথম ধাপ চলছে এখন। এই প্রথম ধাপে জীবিত ও মৃত ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে হামাসের। যা এখন পর্যন্ত পালন করেছে তারা।

কিন্তু ইসরায়েল শর্ত ভঙ্গ করে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি আটকে রেখেছে। হামাস জানিয়েছে, যতক্ষণ এই বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া হবে তারা ততদিন যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কোনো আলোচনা করবে না। এরমধ্যে গতকাল যুদ্ধপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হুমকি দেন, তারা যে কোনে মুহূর্তের আবারও গাজায় বর্বর হামলা চালানো শুরু করবেন।

যদিও হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল-কানৌউ ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তকে চুক্তির বড় লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল পূর্বনির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বন্দিদের মুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। কানৌ আরও বলেন, চুক্তির শর্ত পূরণে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

সূত্র: আল-জাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech