।।বিকে রিপোর্ট।।
গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য, আমাদের প্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠার জন্য যত দ্রুত সম্ভব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হবে। সেই দায়িত্ব বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারকে দেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্র উত্তরণের পথ যত দীর্ঘায়িত হবে, তত বেশি বিভিন্ন রকমের অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করার সুযোগ নিবে পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসররা বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।
রবিবার ২ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত মানবাধিকার নিশ্চিতে রাজনীতিবিদদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে হবে, দেরি হলে ষড়যন্ত্র বাড়বে বলে মন্তব্য করে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে সরকার কী করবে জনগণের সামনে তা দৃশ্যমান করা দাবি জানাচ্ছি। নির্বাচন প্রক্রিয়া যতো দীর্ঘায়িত হবে, চলমান সমস্যা আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, জাতির মধ্যে যে অস্থিরতা রয়েছে তা কাটাতে হলে একটি নির্বাচন প্রয়োজন। যতো দিন যাচ্ছে গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রা পথ বাধাগ্রস্থ করার কূটকৌশল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুধু পুলিশ দিয়ে নয়, রাজনীতি দিয়ে ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা করতে হবে। তাহলেই ফ্যাসিবাদের মূল উপড়ে ফেলা যাবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের প্রথম প্রস্তাবক বিএনপি। দলটি সবার আগে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবের সঙ্গে সরকারের কমিশনের খুব বেশি পার্থক্য নেই।
তিনি বলেন, এমন কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তরিকা বাদ ছিল না, যা আওয়ামী লীগ অনুশীলন করে নাই। বাংলাদেশে বর্বর এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আর কোথাও হয়নি। সে রকম একজন স্বৈরশাসক এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী প্রধান শেখ হাসিনাকে এখনও আমরা অনুশোচনা করতে দেখি না। আওয়ামী লীগের কোনও নেতাকর্মীকে এখনো গণহত্যার দায় স্বীকার করে, ক্ষমা চেয়ে, তারপরে বাংলাদেশে রাজনীতি করবে এ কথা বলতে শুনিনি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন গণহত্যার জন্য শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এখনও অনুশোচনা প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। বরং তাদের বক্তব্য শুনলে মনে হয় অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ারাই অপরাধী। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি পাল্টাতে হবে।
এ সময় দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে না আনা গেলে তারা সরকারের ভালো কাজগুলোরও সমালোচনা করবে। বিষয়টির দিকে নজর দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে সামনে নিয়ে আমরা যদি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে পারি, তাহলে স্বৈরাচারের আর কখনও উন্মেষ হবে না। রাজনৈতিক সংস্কৃতি দিয়ে মানুষের সামনে বিকল্প রাজনৈতিক সংস্কৃতি উপস্থাপন করতে হবে। তাহলে অটোমেটিক বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ দূর হয়ে যাবে।