।।বিকে স্পোর্টস।।
দীর্ঘ ৮ বছর পর পর্দা উঠল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির।
অন্যদিকে প্রায় তিন দশক পার আইসিসির কোন ইভেন্ট আয়োজন করছে পাকিস্তান। সফল আয়োজন করতে সর্বোচ্ছ চেষ্টা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড পিসিবি। ১৮০০ কোটি রুপি খরচ করে সংস্কার করেছে ষ্টেডিয়াম। সকল আন্তরিকতার পরও বৈরী প্রতিবেশি ভারত পাকিস্তানে ম্যাচ খেলতে না রাজী হওয়ায় আয়োজনটা যেন খানিকটা ফিকে হয়েছে। ফলে হাইবব্রিড আয়োজনে দুবাই ও ম্যাচের অংশ হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও দারুন চমক দিয়েছে পাকিস্তান।
ক্রিকেট বিশ্ব যেহেতু আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর জন্য অপেক্ষা করছে, বৈশ্বিক ইভেন্টের জন্য একটি শালীন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার লাহোরে স্বল-পরিসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে পাকিস্তানের ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সরফরাজ আহমেদ, মোহাম্মদ আমির, আজহার আলী, জুনায়েদ খান, শাদাব খান, ইমাদ ওয়াসিম, হাসান আলি, মোহাম্মদ হাফিজ এবং হারিস সোহেলের মতো লাহোরে পর্দা উঠানোর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক উপস্থিতিদের মধ্যে, নিউজিল্যান্ডের বোলার টিম সাউদি, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ এর রাষ্ট্রদূত এবং অবসরপ্রাপ্ত দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার জেপি ডুমিনি উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান উপস্থিতদের ভাষণ দেওয়ার আগে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সঙ্গীত শিল্পীদের পরিবেশনা এবং আতশবাজি দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
তিনি বলেন, আমি প্রত্যেক ক্রিকেট অনুরাগী এবং সমর্থককে আশ্বস্ত করছি যে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য প্রস্তুত। আমরা বলতে পারি যে চারটি দল ইতিমধ্যে করাচিতে পৌঁছেছে যখন ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নামবে।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ এর আয়োজক হিসেবে এটি একটি দীর্ঘ প্রচেষ্টা যা অক্লান্ত উত্সর্গ এবং ত্যাগের প্রয়োজন। বিশ্বমানের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার জন্য আমরা গাদ্দাফি এবং জাতীয় স্টেডিয়ামের আপগ্রেডেশন করেছি। কর্মীদের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ, উভয় ভেন্যুই রেকর্ড সময়ে অত্যাধুনিক সুবিধায় রূপান্তরিত হয়েছে।
যাইহোক, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণকারী আটটি দেশের অধিনায়ক বা প্রতিনিধিদের কেউই পর্দা-উত্থাপনের অনুষ্ঠানের ভেন্যুতে উপস্থিত না থাকা দেখে হতাশাজনক ছিল। প্রথাগত অধিনায়কের ফটোশুটও হয়নি। ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে আগে আলোচনা হয়েছিল কিন্তু ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার পাকিস্তান সফরে অস্বীকৃতি জানানোর পরে ধারণাটি বাতিল হয়ে যায়।
এদেক আজ উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি স্বাগতিক পাকিস্তান।
করাচি স্টেডিয়ামে কিউইদের বিপক্ষে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। যদিও এই ম্যাচে মানসিকভাবে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে ব্ল্যাক ক্যাপরা। সদ্যই শেষ হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানকে তাদের ঘরের মাঠেই দু’বার হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ফাইনালে স্বাগতিকদের হারিয়েই শিরোপা জেতে মিচেল স্যান্টনাররা।
পাকিস্তান একাদশ: ফখর জামান, বাবর আজম, সৌদ শাকিল, মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), সালমান আঘা, তাইয়্যব তাহির, খুশদিল শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফ, আবরার আহমেদ।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: উইল ইয়ং, ডেভন কনওয়ে, কেইন উইলিয়ামসন, ড্যারিল মিচেল, টম ল্যাথাম, গ্লেন ফিলিপস, মিচেল ব্রেসওয়েল, মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক), নাথান স্মিথ, ম্যাট হেনরি, উইল ও’রুর্ক।
৮ জাতির এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে শুরুতে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে আয়োজক পাকিস্তান। করাচি জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় শুরু হবে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটি। জয় দিয়ে আসর শুরু করতে চায় পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড উভয় দলই।
দীর্ঘ আট বছর পর মাঠে ফিরল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। ফাইনালে ভারতকে ১৮০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। এবার ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগিয়ে শিরোপা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর পাকিস্তান।
দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান বলেন, ‘দীর্ঘ দিন পর পাকিস্তানের মাটিতে কোনো আইসিসির ইভেন্ট হতে যাচ্ছে। এটি নিয়ে আমরা সবাই দারুণ উচ্ছ্বসিত। পাশপাশি মাঠের লড়াইয়ে নামতে আমরা মুখিয়ে আছি। নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স প্রদর্শনে আমরা প্রস্তুত। শিরোপা ধরে রাখাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানকে দু’বার হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী নিউজিল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে আবারও পাকিস্তানকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক জয়ের স্বাদ নিতে চায় কিউইরা।
নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার বলেন, ‘শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু করবো। প্রথম ম্যাচের স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে হবে আমাদের। ম্যাচটি আমাদের জন্য সহজ হবে না। পাকিস্তান খুবই শক্তিশালী দল। তাদের দলে বিশ্ব সেরা ব্যাটার-বোলার আছে। তবে সদ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে দু’বার জিতেছি আমরা। ঐ দু’টিই জয়ই আমাদের আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে। আশা করি টানা তৃতীয় ম্যাচে মত পাকিস্তানকে হারাতে সক্ষম হবো আমরা।’
এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১১৮ বার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড। জয়ের পাল্লা ভারী পাকিস্তানের দিকে। ৬১টি ম্যাচ জিতেছে তারা। ৫৩ ম্যাচে জয় আছে নিউজিল্যান্ডের। ১টি ম্যাচ টাই ও ৫টি পরিত্যক্ত হয়।
শেষ খবর পাওয়া যায়- স্বাগতিক পেসারদের নাকানিচুবানি খাইয়ে সেঞ্চুরি করেছেন দুই কিউই ব্যাটার উইল ইয়াং ও টম ল্যাথাম। যাতে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে কিউইদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩২০ রান।
আইসিসির এই মেগা টুর্নামেন্টে তৃতীয়বার দলীয় সংগ্রহ তিনশ পেরোল নিউজিল্যান্ড। আজকের পুঁজি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৩৪৭ রানও ছিল কিউইদের। বিপরীতে, পাকিস্তানকে ম্যাচটি জিততে হলে একপ্রকার রেকর্ডই গড়তে হবে।