ব্যক্তিগত স্বার্থে একদল সাংবাদিক ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার সাথে সহযোগিতা করেছে: শফিকুল

  • আপলোড টাইম : ১১:২৭ পিএম, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
ছবি: বাসস

।।বিকে রিপোর্ট।।
ব্যক্তিগত স্বার্থে একদল সাংবাদিক ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার সাথে সহযোগিতা করেছে, তথ্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে এবং হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার জন্য মিথ্যা ন্যারেটিভ (বর্ণনা) তৈরি করেছে- বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত গণমাধ্যম চাই’ নামের প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘ফ্যাসিস্ট মিডিয়া ন্যারেটিভস: আ রেট্রোস্পেক্টিভ অন জুলাই ১-৩৬’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য দানকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানসহ ২০০৯ সাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনাবলী চলাকালীন, সাংবাদিকদের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য ন্যারেটিভ তৈরি করে স্বৈরাচারী সরকারের কর্মকাণ্ডকে ন্যায্যতা দেয়ার জন্য কাজ করেছিল। এই সাংবাদিকরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছিল যেখানে জনগণের অধিকারকে উপেক্ষা করা হয়েছে এবং সহিংসতাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়, বিশেষ করে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় রাজনৈতিক ঘটনাবলীর সময় কিছু সাংবাদিক ক্ষমতাসীন সরকারের দালাল হিসেবে কাজ করেছিলেন। গত ১৫ বছর ধরে, কিছু সাংবাদিক সুবিধার বিনিময়ে স্বৈরশাসকের সেবা করেছেন।

তিনি সমালোচনা করে বলেন যে, অতীতের শাসনামলে যোগ্যতার পরিবর্তে রাজনৈতিক বিবেচনায় মিডিয়ায় নিয়োগ করা হয়েছিল, যার ফলে সরকারের স্বার্থ রক্ষাকারী পক্ষপাতদুষ্ট সাংবাদিকতার উত্থান ঘটে।

তিনি, মিডিয়ার ভূমিকা পরিবর্তনের আহ্বান জানান এবং দায়িত্বশীল ও স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন, যেখানে মিডিয়া আউটলেটগুলো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা সরকারের প্রশংসা করার পরিবর্তে তথ্য উপস্থাপন ও গঠনমূলক সমালোচনা করার ওপর মনোনিবেশ করবে।

সরকারের প্রশংসা করার পরিবর্তে গঠনমূলক সমালোচনা করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে, আমি লক্ষ্য করেছি যে, একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করে দুটি বা তিনটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।’

তিনি বলেন, আমরা তাদের ফোন করে বলেছি যে, এটি করার কোনও প্রয়োজন নেই। বরং গঠনমূলক সমালোচনা করুন। আমরা চাই আপনারা প্রতিটি বিষয় তুলে ধরুন। প্রশংসার কোনও প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে সাংবাদিকতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করতে চাই। এ কাজটি করার জন্য, অন্তর্র্বর্তী সরকার দ্বিতীয় ধাপে গতকাল ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। আমরা চাই সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ এই প্রচেষ্টায় অবদান রাখবে।

তিনি বলেন, আসুন আমরা এমন একটি দেশ গড়ে তুলি যেখানে সকলের কণ্ঠস্বর শোনা যাবে, যেখানে কেউ নিশ্চুপ থাকবে না, যেমনটি গত ১৫ বছর ধরে হয়ে আসছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন নয়ন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক মো. আবু সাদিক কায়েম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডিইউজেএ) সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech