রমজানের প্রস্তুতি : শুল্ককর কমানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগের ফলে ছোলা, বুট খেজুরের দামে সন্তুষ্ট ক্রেতারা

  • আপলোড টাইম : ১১:০৫ এএম, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
ছবি: সংগৃহিত

।।বিকে রিপোর্ট।।
আসন্ন মাহে রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। যদিও লেবুর বাজারে আগুনে অসন্তুষ্ট ক্রেতারা তবে রমজানের অন্যান্য নিত্যপণ্যগুলো কিনতে গিয়ে বিগত কয়েক বছরের রমজানের তুলনায় কিছুটা উল্টোচিত্র দেখছেন তারা। আগে যেখানে রমজানকে সামনে রেখে ছোলা, বুট, খেজুরের দাম বেড়ে যেত সেখানে এবার দামতো বাড়েনি উল্টো কমেছে কিছু পণ্যে। যার ফলে ভীষন খুশি ক্রেতারা।

শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে শুল্ককর কমানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগের ফলে এবার ছোলা, খেজুর, বেসনের দাম বাড়েনি, বরং কিছুটা কমেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারে বুটের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। ছোলা ১১৫ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ১২০-১২৫ টাকা, মুগডাল ১৭০ টাকা, চিনি ১২৫ টাকা। এছাড়া বুটের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, অ্যাংকরের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে চিড়া ও মুড়ির। বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট এখনও কাটেনি।

এদিকে আজকের বাজারে খেজুরের দামেও কিছুটা স্বস্তি মিলছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকা কেজি (আকারভেদে), মরিয়ম ১১৮০ থেকে ১২৫০ টাকা, আজোয়া ১০৫০ টাকা, মাশারুক ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, সুগাই জাতের খেজুর ৯৫০ টাকা, ডাল খেজুর ৬৫০ টাকা। এছাড়া দাবাস খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪৬০ থেকে ৪৮০ টাকা, জাহিদি ২০০ থেকে ২৬০ টাকা, বরই খেজুর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা দরে।

জানা গেছে, রমজানকে কেন্দ্র করে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারিভাবে শুল্ককর কমানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে এবার স্বাভাবিক পর্যায়েই আছে ছোলা ও খেজুরের দাম।

রমজানে যেসব নিত্যপণ্যের বাড়তি চাহিদা থাকে সেগুলোর সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, আগের মজুত পণ্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে আমদানিপণ্যও। ফলে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, খেজুরসহ বাড়তি চাহিদার এসব পণ্যের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ছোলার চাহিদা বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টন। এর মধ্যে শুধু রমজান মাসে চাহিদা থাকে প্রায় এক লাখ টন। এই হিসাবে দেশে প্রতি বছর এক লাখ ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ টন ছোলা আমদানি হয়।

এদিকে ট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের গত সাড়ে সাত মাসে ছোলা আমদানি হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৯ টন। এর মধ্যে শুধু জানুয়ারি মাসে আমদানি হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৩০৪ টন। এর বাইরে চলতি মাসের (ফেব্রুয়ারি) ১৬ দিনে ছোলা আমদানি হয়েছে ৮২ হাজার ৭১৭ টন। সেই হিসাবে গত দেড় মাসে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে ছোলা আমদানি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার টন, যা রমজানে ছোলার চাহিদার প্রায় দেড়গুণ।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে খেজুরের বার্ষিক চাহিদা ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টন। এর মধ্যে রমজানে খেজুরের চাহিদা থাকে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টন।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে খেজুর আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের গত সাড়ে ৭ মাসে ৩৭ হাজার ৫৭০ টন খেজুর আমদানি হয়েছে। যার প্রায় ৮০ শতাংশ আমদানি হয়েছে গত দেড় মাসে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে আমদানি হয়েছে ১৪ হাজার ৮৪৯ টন। আর ফেব্রুয়ারি মাসের গত ১৬ দিনে আমদানি হয়েছে ১৬ হাজার ৭৯৪ টন।

রমজান সামনে রেখে ছোলা, খেজুরের আমদানি বাড়ায় চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বেড়েছে সরবরাহ। ফলে পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং মজুত থাকায় রোজাকে কেন্দ্র করে সামনের দিনে খেজুর, ছোলা-বুটসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আর বাড়বে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech