।।বিকে রিপোর্ট।।
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রেজাউল করিম এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন এডভোকেট আমিনুল ইসলাম।
খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহিদুল ইসলাম, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসেন, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক ও নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এডভোকেট আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, এই মামলায় ৩৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। কোনো সাক্ষী মামলার ঘটনার সঙ্গে খালেদা জিয়ার জড়িত থাকার তথ্য বলেননি।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় প্রত্যেককে খালাস দেয়া হয়েছে।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, নাইকো দুর্নীতি মামলায় রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া কোনো দুর্নীতি করেননি। এমনকি তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারও করেননি।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২৩ সালে ১৯ মার্চ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলার বিচার চলাকালীন ৬৮ সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি এ মামলার যুক্তি-তর্ক ও শুনানি শেষ হয়। এরপর রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন আদালত।
খালাসের পর বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা জিইয়ে রাখা হয়েছিল।
দীর্ঘদিন পর হলেও আদালত বেগম খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়েছেন। আদালতে ন্যায় বিচার পেয়েছেন তিনি। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো মামলা যে সাজানো ছিল খালাসের রায়ে তা প্রমাণিত হয়েছে।