বেক্সিমকো শিল্প পার্কের ১৪টি প্রতিষ্ঠান লে-অফ ঘোষনা: ৯ মার্চ থেকে পাওনা পরিশোধ

  • আপলোড টাইম : ১০:১৭ এএম, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
ছবি: সংগৃহিত

।।বিকে রিপোর্ট।।
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে লে-অফ ঘোষণা করা ১৪টি কারখানার ‘পুনর্বাসনে’ একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে সরকার। এসব কারখানার ৩১ হাজার ৬৬৯ জন শ্রমিক এবং এক হাজার ৫৬৫ জন কর্মকর্তার পাওনা ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

আগামী ৯ মার্চ থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের লে-অফ করা প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ শুরু হবে। এই পাওনা পরিশোধে সরকারকে খরচ করতে হবে ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য জানান।

আজ শুক্রবার থেকে বেক্সিমকো শিল্প পার্কের ১৪টি প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, চলতি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের লে অফকৃত ১৪টি প্রতিষ্ঠানে ৩১ হাজার ৬৬৯ জন শ্রমিক, এক হাজার ৫৬৫ জন কর্মকর্তার পাওনা বাবদ ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা প্রয়োজন। এই টাকা যোগাড় করেছে সরকার।

শ্রম উপদেষ্টা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ৩২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, আর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন কেন্দ্রীয় তহবিলের বিভিন্ন হিসাব থেকে দেওয়া হবে ২০০ কোটি টাকা। বেক্সিমকো গ্রুপের পাওনাদারদের মধ্যে শ্রমিক রয়েছেন ৩১ হাজার ৬৭৯ জন। আর কর্মচারী হচ্ছেন এক হাজার ৫৬৫ জন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, বেক্সিমকো শিল্প পার্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ ব্যাংক ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধিসহ বেক্সিমকো লিমিটেডের রিসিভার। কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে কাজ করবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

শ্রম উপদেষ্টা জানান, আজ শুক্রবার বেক্সিমকো শিল্প পার্কের ১৪টি প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হবে।

৯ মার্চ থেকে বেক্সিমকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

শ্রম উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, বেক্সিমকো শিল্প পার্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ২০০৮-২৪ পর্যন্ত জনতা ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ প্রদানের জন্য দায়ী ও জড়িত কর্মকর্তা, ব্যাংকের বোর্ড সদস্য, কম্পানি বোর্ড সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) সংশ্লিষ্ট অন্য সবার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, ঋণ প্রদানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সে জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে।

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা চলছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ১৩ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। ২৯ আগস্ট সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বেক্সিমকো গ্রুপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনা মেটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। পরে শেয়ার বিক্রিতে জটিলতা দেখা দেওয়ায় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ছিলেন।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech