।।বিকে রিপোর্ট।।
দলীয় নেতাকর্মী ও রাউজান সহ উত্তর চট্টগ্রামের সর্বস্থরের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মা-বাবার পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বর্ষিয়ান রাজনিতীবীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান।
শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি আসরের শেষে চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সবশেষ জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিসান বিন মাজেদ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন পালিত ও মুক্তিযোদ্ধা হাসেমের উপস্থিতিতে গার্ড অব অনার প্রদান করেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের একটি টিম। এরপর গহিরা এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে মা বাবার পাশে সমাহিত করা হয় বর্ষিয়ান এই রাজনিতীবীদকে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর নিজ বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন আবদুল্লাহ আল নোমান। তৎক্ষণাৎ স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আব্দুল্লাহ আল নোমান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সঙ্গে রাজনীতি করেন। পরে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে বিএনপিতে যোগ দেন।
বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হেলিকপ্টার যোগে তার মরদেহ চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামে আনা হয়। সেখান থেকে তার মরদেহ রাখা হয় কাজির দেউড়িস্থ ভিআইপি টাওয়ারের বাসভবন প্রাঙ্গণে।
শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, ৯টায় ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি নেওয়া হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারী-কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সকাল ১১টার দিকে নিয়ে যাওয়া হয় নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন মাঠে। সেখানে রাখা হয় দুপুর ১টা পর্যন্ত। পরে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদ প্রাঙ্গণে। জুমার নামাজের পর হাজার হাজার মানুষ নোমানের জানাজায় অংশ নেন।
জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকে দূরদূরান্তের মানুষ আসতে থাকেন গহিরা গ্রামের বাড়িতে। গহিরা স্কুল মাঠে ঢল নামে মানুষের। নিজ গ্রামের বাড়ির জানাজাসহ চারটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের বাড়ির জানাজায় অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপি আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপি নেতা মীর হেলাল ও তার ছেলে সায়েদ আল নোমানসহ অনেকে।
এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল, নগর আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহ আলম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রামের আমীর সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া প্রথম সারিতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির উত্তর জেলা আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, নোমানের ছেলে তরুণ রাজনীতিক সাঈদ আল নোমান, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ, আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক উজ্বল নক্ষত্র। চট্টগ্রামের উন্নয়নে তাঁর অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন দলমত নির্বিশেষে। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।