।।ওবায়দুল হক।।
বছর ঘুরে রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আবার এলো পবিত্র মাহে রামাদান। আহলান সাহলান, মাহে রমজান। শুভেচ্ছা স্বাগত মাহে রমজান।
১ মার্চ বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে । রবিবার থেকে ১ম রোজা শুরু।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।
হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন করা হয়েছিল তোমাদের পূর্বসূরিদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার বা মোত্তাকি হতে পার। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫ ও ১৮৩)
এ মাসের অন্যতম প্রধান ইবাদত হলো রোজা রাখা। রমজানে রোজা রাখা ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি এবং এটি সকল সুস্থ মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক।
রোজা বা সাওম অর্থ সাওম অর্থ বিরত থাকা : এর বহুবচন হলো ‘সিয়াম’। ফারসি, উর্দু, হিন্দি ও বাংলায় সাওমকে ‘রোজা’ বলা হয়। ইসলামি পরিভাষায় সাওম বা রোজা হলো ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইবাদতের উদ্দেশ্যে পানাহার ও যৌনসম্ভোগ থেকে বিরত থাকা।
শরিয়তের ভাষায় রোজা বলা হয়, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার, যৌনকর্ম এবং আল্লাহ ও তার রসুলের নিষিদ্ধ যাবতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা। তবে ছোট শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, ভ্রমণকারী, গর্ভবতী, দুধপান করানো বা ঋতুমতী নারীদের রোজা না রাখার ব্যাপারে শিথিলতা রয়েছে।
রমজানে পানাহার প্রসংগে, আল্লাহ তাআলা কোরআন কারিমে বলেন, ‘আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা হতে উষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)।
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সুসংবাদ নিয়ে আসে মাহে রমজান। এ মাসে মুমিন বান্দার জন্য বিশেষ পুরস্কার হলো ইবাদতের সহজতার জন্য আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে পুরো মাস বন্দি করে রাখেন।
প্রিয় নবী সাল্লুল্লাহ আলাইহিসসালাম বলেন, যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের নিয়তে রমজানে রোজা পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি ইমানের সহিত সওয়াবের আশায় রমজানে রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে জেগে ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি, প্রথম খণ্ড, হাদিস: ৩৭, ৩৬ ও ৩৪)।
রাসূল (সা.) বলেছেন, মাহে রমজান এলে এর প্রথম রাত থেকে শয়তান ও অবাধ্য জিনদের শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়। জাহান্নামের সব কয়টি দরজা রুদ্ধ করে দেওয়া হয়।
এ সময় পবিত্র জান্নাতের সব কয়টি দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং একজন ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, হে কল্যাণকামী অনুসন্ধানী! তুমি অনুসন্ধান কর ও এগিয়ে চল। আর অকল্যাণকামী পাপাত্মাদের বলতে থাকেন, তুমি থাম। (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)।
মুসলমানদের কাছে রমজান মাস পবিত্র মাস। এই একমাস সংযম সাধনার পর মুসলমানরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করে থাকেন।