ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত।
বুধবার ৮ জানুয়ারী বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং তখন থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে আড়ালে চলে গেছেন হাসিনা। যদিও দিল্লির একটি সেফ হাউজে তাকে রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে ভারত কবে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে নোট ভার্বাল পাঠায় বাংলাদেশ। তবে সেটির জবাব এখন পর্যন্ত দেয়নি নয়াদিল্লি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান- মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে বাংলাদেশ চিঠি পাঠিয়েছে।
এমন সন্ধিক্ষনে হাসিনা যেন ভারতে আরও সময় অবস্থান করতে পারেন সেজন্য তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে সূত্রটি। এছাড়া তাকে কোনো ধরনের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়নি বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। কারণ ভারতে কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই।
হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর কাজটি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে এবং স্থানীয় ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। তবে তাদের কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করেননি এবং তারা তথ্যটির বিস্তারিতও জানাননি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো নিজস্ব কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলেছে, ফরেন রিজিয়নাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে আসা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনাকে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
এর আগেও এফআরআরওর মাধ্যমেই শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকার বৈধতা দেওয়া হয়। দেশটিতে উদ্বাস্তু সংক্রান্ত আইন না থাকায় এমন পদক্ষেপে নেওয়া হয়।
এদিকে, মাত্র একদিন আগেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ। দেশটির প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। এতে ফের শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এছাড়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত সোমবার দ্বিতীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এরমধেই হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করল নরেন্দ্র মোদির সরকার।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস