গণ-অভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৭০০ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় তিনি জানান, তবে তাদের ধরতে সরকার তৎপর রয়েছে। বাইরে থাকা সন্ত্রাসীদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
রবিবার ২৬ জানুয়ারী সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন ও জরুরি সেবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন কারাগার থেকে ২ হাজার ২শর বেশি আসামি পালিয়েছিল। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০০ মতো আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ৭শ হাজতি ধরা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী বাইরে এসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে, তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।
এ সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য পুলিশের কাজের মন্থর গতিকেই দায়ী করেছেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বর্তমানে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ সদস্য রয়েছে। তবে বাহিনীটির কাজের গতি কম থাকার কারণেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কারাগারের জরুরি হটলাইন সেবার মাধ্যমে বন্দীর অবস্থান, প্যারোলে মুক্তি সম্পর্কিত তথ্য, শারীরিক অবস্থা, হাজিরা, সাক্ষাৎকার ও কথাবলার তারিখ জানা যাবে। বন্দীর স্বজনরা এই হটলাইন নাম্বারে ফোন দিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন।
আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের এই জরুরি সেবা সার্ভিসে নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশব্যাপী সহিংসতা ও সরকার পতনের উদ্ভূত পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে দেশের কয়েকটি কারাগারে বিশৃঙ্খলা-বিদ্রোহ করেন বন্দিরা। বাইরে থেকে কোনো কোনো কারাগারে চালানো হয় হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ।
এই পরিস্থিতিতে কারাগারগুলো থেকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার ২ হাজার ২০০ বন্দি পালিয়ে যায়। যারমধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনকে গ্রেপ্তারের পর ফের কারাবন্দি করা হলেও এখনো ৭০০ বন্দি পলাতক রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে ১১ জন, ৭০ জন জঙ্গি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছে।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কারা প্রাঙ্গণে পৌঁছলে কারারক্ষীদের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর তিনি কারাগারের ভেতরে পরিদর্শনে যান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, কারা উপমহাপরিদর্শক (ঢাকা বিভাগ) মো. জাহাঙ্গীর কবির, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার ও জেলার একেএএম মাসুম প্রমুখ।